খাবারে ভেজাল নিজ থেকে মেশে না। মানুষের অসৎ উদ্দেশ্যের ফসল এই ভেজালযুক্ত খাবার। বাড়তি লাভের লোভে পড়ে মানুষ মানুষকে ক্ষতিগ্রস্ত করে। খাদ্যে ভেজাল মেশানোর মতো চরম খারাপ কাজ করতেও তাদের হাত কাঁপে না। কিন্তু কথায় বলে, চোরে না শোনে ধর্মের কাহিনি। তাই মানুষেরা ভালো হয়ে যাবে এই আশা বাদ দিয়ে ভেজালযুক্ত খাবার চিনে রাখতে হবে আপনাকেই। তাহলে আর বিশ্বাস করে ঠকে আসতে হবে না।
চাল, ডাল, আটা, মসলা তেল- সবকিছুতেই ভেজাল মেশানো হচ্ছে। এই তালিকা থেকে বাদ যাচ্ছে না সরিষার তেলও। ভেজালযুক্ত বা নকল সরিষার তেল খেলে তা শরীরে বিভিন্নভাবে ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে। তখন দেখা দিতে পারে নানা ধরনের অসুখ। অনেক সময় সরিষার তেলে রাসায়নিক মিশিয়ে সোনালি রঙ নিয়ে আসে অসাধু ব্যবসায়ীরা। সেই রঙযুক্ত তেল দিনের পর দিন খেলে বৃদ্ধি পায় ক্যান্সারের ঝুঁকি।
ভেজাল সরিষার তেল খেলে তা বমি, পেট খারাপ, পেট ফোলা, সারা শরীরে ব়্যাশ, গ্লুকোমা, দৃষ্টিশক্তির সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। এই তেল খেলে তা হার্ট এবং শ্বাসযন্ত্রের রোগ, রক্তস্বল্পতার ঝুঁকিও বাড়িয়ে দেয়। বাইরে থেকে দেখলে তেলে ভেজাল মিশ্রিত কি না তা বোঝা সম্ভব হয় না। তবে তা চিহ্নিত করার জন্য কিছু উপায় আছে। সেসব উপায় মেনে চললে সহজেই ভেজাল তেল চিহ্নিত করা যাবে। চলুন জেনে নেওয়া যাক-
ফ্রিজিং টেস্ট
বাজার থেকে সরিষার তেল কিনে এনে ২-৩ ঘণ্টা রেফ্রিজেরেটরে রেখে দিন। এরপর ফ্রিজ থেকে বের করে দেখুন। যদি তেলের খানিকটা জমে সাদা হয়ে যায় তাহলে বুঝবেন সেই তেলে ভেজাল মেশানো হয়েছে। কারণ খাঁটি সরিষের তেল কখনো জমে না, সবসময় তরল অবস্থায় থাকে।
আঙুলের সাহায্যে পরীক্ষা
সরষের তেলে ভেজাল আছে কি না তা বোঝার একটি খুবই সহজ ঘরোয়া উপায় হলো হাতের তালুতে আঙুল দিয়ে ঘষে দেখা। আপনার হাতের তালুতে একটুখানি সরিষের তেল নিয়ে তারপর তা খানিকক্ষণ ঘষে নিন। যদি তেলের রঙ ছেড়ে যেতে শুরু করে, কোনোও আলাদা গন্ধ পান বা চিটচিটে ভাব অনুভব করেন তবে বুঝে নেবেন সেই তেল ভেজালমিশ্রিত।
গন্ধ পরীক্ষা
আসল সরিষার তেলে তীব্র ঝাঁঝালো গন্ধ থাকে, যা চোখে পানি এনে দেয়। অপরদিকে ভেজাল মেশানো সরিষার তেলের গন্ধ ততটা তীব্র হয় না। তাই গন্ধ শুঁকে খুব সহজেই এটি বুঝতে পারা সম্ভব।
রঙের মাধ্যমে পরীক্ষা
সরিষার তেলের রং খুব গাঢ় এবং ঘন হয়। তবে অনেক সময় দেখবেন সরিষার তেল হালকা হলুদ রঙের। কোনো তেল যদি এরকম হালকা হলুদ রঙের দেখেন তাহলে তাতে ভেজাল থাকার সম্ভাবনা বেশি।